01763225044
Chat With Supplier পাইকারি পণ্যের দাম সর্বদা পরিবর্তনশীল। পণ্যের বর্তমান দাম জানতে উপরের মোবাইল নম্বরে সাপ্লায়রকে সরসরি ফোন করুন।
বিদেশি সাপ্লায়ার কে LC বা TT তে দাম পরিশোধ করুন ৷ দেশী সাপ্লায়ার কে ক্যাশ অন ডেলিভারী বা ফেস টু ফেস ক্রয় বিক্রয় করতে পারেন । কোন ভাবেই অগ্রিম টাকা পয়সা লেনদেন
করবেন না। কুরিয়ারে কন্ডিশনে পণ্য হাতে পেয়ে টাকা প্রদান করবেন৷
আপনার অসাবধানতায় কোন প্রকার প্রতারণার স্বীকার হলে আমরা দায়ী নই ৷
অনলাইনে পন্য ক্রয়ের আগে সমস্ত সিক্যুরিটি গ্রহন করে নিন ৷
আমকে বলা হয় ফলের রাজা। পৃথিবীতে যত ধরণের সুস্বাদু ফল আছে,তার মধ্যে আমের অবস্থান সবার উপরে। বাংলাদেশের প্রায় প্রত্যেকটি জেলাতেই কম বেশি আম উৎপাদিত হয়, তবে বাহারি রঙের আর সুস্বাদু আমের কথা বললে সবার আগে আসে রাজশাহীর নাম। রাজশাহী বিভাগের চাঁপাইনবাবগঞ্জ কে বলা হয় আমের রাজধানী। এখানকার বিখ্যাত আম দেশের সব অঞ্চলে সমান সমাদৃত। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিগত কয়েক বছর ধরে ইউরোপ আমেরিকার বাজারে অবস্থান করে নিয়েছে এই আম।
বর্ণ, গন্ধ,স্বাদ,আকৃতি এবং অঞ্চলের ভিন্নতায় আম কয়েক শত জাতের হয়ে থাকে। যেমনঃ
হিমসাগর, ল্যাংড়া, ক্ষিরসাপাত,আম্রপালি(রূপালি আম), গোপালভোগ, ফজলি, আশ্বিনা, বোম্বাই, অগ্নি, অমৃত ভোগ, আলফাজ বোম্বাই, আরিয়াজল, আরাজনমা, আলম শাহী, গিলা, গোলাপবাস, আনারস, ইলশাপেটি, কলাচিনি, কাঁচামিঠা, কালিয়া, কৃষ্ণচূড়া, টিক্কাফারাশ, টিয়াকাঠি, কালাপাহাড়ী, কালিভোগ, কালুয়া, কাঞ্চন খোসাল, কাজলা সিন্দুরি, কিষাণ ভোগ, কোহিনুর, কোহিতুর, কুয়া পাহাড়ি, টোফা, কাজল ফজলি, কাইয়া ডিপি, কাটাসি, গোলাপ খাস, গোলাপ বাস, গোল্লা, গুল্লি, গৌরজিত, গুলগুল্লি, চেপি, চরবসা, চম্পা, চন্দন খোস, চিনি কালাম, চিনি বড়ই, চিনি পাতা, ছাবিয়া, ছানাজুর, ছফেদা, জালী বান্ধা, ভাঙা, জিলাপির ক্যাড়া, জোয়ালা, জিতুভোগ, গোবিন্দভোগ, জর্দা, জর্দালু, ত্রিফলা, বাওয়ানী, বাউনি লতা, তাল পানি, দার ভাঙা, দর্শন, দাদভোগ, দেউরি, দিলসাদ, দোফলা, দিল্লির লাডুয়া, দুধিয়া, দেওভোগ, দুধসর, বড়বাবু, নারিকেলি, নারকেল পাথী, নয়ন ভোগ, প্রসাদ ভোগ, জিতুভোগ, সীতাভোগ, বোগলাগুটি, পাথুরিয়া, ফজলি কালান, ফনিয়া, বারমাসি, বোতল বেকি, বোতলা, বড়শাহী, বাতাসা, বাউই ঝুলি, বিড়া, বেগম পছন্দ, কমল পছন্দ, বেল খাস, বিমলা, বিশ্বনাথ, বোম্বাই কেতুল্লা, বদরুদ্দোজা, বোম্বাই গোপাল ভোগ, বোম্বাই খিরসা, বউ ভুলানী, বৃন্দাবনী, সাহা পছন্দ, বাদশা ভোগ, ভাদুরি, ভবানী, ভবানী চৌরাস, ভারতী, মাল ভোগ, মাংগুড়া পাকা, মিসরীদাগী, মিসরী ভোগ, মিসরী দানা, মিসরী কান্ত, ভূত বোম্বাই, মতিচুর, মোহন ভোগ, মোহন পছন্দ, রাজরানী, রাম প্রসাদ, রানি পছন্দ, কাজী পছন্দ, বিলুপছন্দ, রানি ভোগ, রাজ ভোগ, কালিভোগ, জিবাভোগ, লাক্ষৌ, লাদুয়া, লাডুয়া, লোরাল, লালমুন, লক্ষণ ভোগ, লতা খাট, লতা বোম্বাই, নাবী বোম্বাই, লোহাচুর, শ্যাম লতা, রসবতী, সাটিয়ার ক্যাড়া, সাদাপাড়া, সবজা, সুবা পছন্দ, শাহী পছন্দ, সরিখাস, শরিফ খাস, সিন্দুরি, সারাবাবু, শোভা পছন্দ, সুলতান পছন্দ, সফদরপছন্দ, সূর্যপুরী, সুরমাই ফজলি, হায়াতী, খুদি ক্ষিরসাপাত, ক্ষিরপুরি, ক্ষিরমন, ক্ষির টাটটি, ক্ষির বোম্বাই, বেলতা, হাড়িভাঙা, বৈশাখী, গৌড় মতি, হুক্কা, লাড়ুয়ালী, ডালভাঙা, মণ্ডা, মিছরী দমদম, নীলাম্বরী, খান বিলাস, বাতাসা, মনাহারা, পাথুরিয়া, তোহ্ফা, ফোনিয়া, মধুচুষকি, মধুমামি, নকলা, মোহিনিসিন্দুরী, ভুজাহাড়ি, সন্ধ্যাভারুতি, পদ্মমধু, অমৃতভোগ, লতারাজ, বৃন্দাবনি ইত্যাদি।
এসব আমের মধ্যে বাংলদেশে জনপ্রিয় কয়েকটি জাত হচ্ছে- নাগ ফজলি,হিমসাগর,হাড়িভাঙ্গা, ক্ষীরভোগ, মোহনভোগ, রাজভোগ, রানিভোগ,চোষা, বউ সোহাগী, ল্যাংড়া, আলতাপেটি, রানি পছন্দ, দুধ সর, আম্রপালি, লক্ষ্মণভোগ, মল্লিকা, মিছরি দানা ইত্যাদি।
আমের জাতের যেমন ভিন্নতা আছে, তেমনি এই মৌসুমী ফলটির একেকটি জাত একেক সময়ে বাজারে আসে।তবে আম পাকার সময়কাল মে মাস থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত বিস্তৃত। আগে আম চাষীরা অধিক মুনাফার আশায় নির্দিষ্ট সময়ের আগেই অপরিপক্ব আম বাজারে নিয়ে আসতো। এই অপরিপক্ক আমের বাজারজাত ঠেকাতে কয়েক বছর ধরে রাজশাহীতে আম পাড়ার সময় নির্ধারণ করে দিচ্ছে জেলা প্রশাসন। বেঁধে দেয়া সময় অনুযায়ী, এ বছর ১৫ মে থেকে গুটি আম পাড়া শুরু হয়। এরপর ২০ মে থেকে গোপালভোগ, ২৫ মে থেকে লক্ষণভোগ ২৮ মে থেকে হিমসাগর বা খিরসাপাত, ৬ জুন থেকে ল্যাংড়া এবং ফজলি ও আম্রপালি ১৬ জুন থেকে নামানো শুরু হয়। এছাড়া আশ্বিনা জাতের আম ১ জুলাইয়ের আগে চাষীরা গাছ থেকে নামাতে পারবেন না।
আমের মৌসুমে সবার আগে দেখা যায় গোপালভোগ জাতের আম। গোপালভোগ আম মাঝারি আকারের, পাকা আমের রং হলুদাভ সবুজ, পাকলে খোসা পুরোপুরি হলুদ হয় না, আঁটি পাতলা, আঁশ নেই ও মিষ্টি। তারপর ওঠে হিমসাগর বা ক্ষীরশাপাতি আম। এ জাতের আমও পাকলে হলুদাভ সবুজ হয়, মাঝারি আকারের, কমলা শাঁস, খুব মিষ্টি, সুঘ্রাণযুক্ত ও ভালো রকমের সুস্বাদু ।দেশের তৃতীয় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পায় ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জের খিরসাপাতি আমটি’।
এরপর আসে ল্যাংড়া। ল্যাংড়া আম অনেকটা আয়তাকার গোল, হালকা সবুজ রঙের খোসা, পাকলেও হলুদ হয় না, খোসা পাতলা, হলুদ শাঁস, ভালোভাবে না পাকলে আম খেলে মুখ চুলকাতে পারে। সুঘ্রাণের সুখ্যাতি রয়েছে ল্যাংড়া আমের। এ সময় লক্ষ্মণভোগ বা লখনা আমও পাওয়া যায়। পাকলে এ জাতের আম উজ্জ্বল হলুদ হয়ে যায়, বোঁটার কাছে লালাভ রং ধরে। এ জন্য একে রঙিন আমও বলে। ঘ্রাণ ভালো। রাজশাহীতে পাওয়া যায় লখনা আম।
এরপর ওঠে হাঁড়িভাঙা আম—রংপুর অঞ্চলে এ জাতের আম পাওয়া যায়। ভরা মৌসুম শেষ হলেও গাছে ও বাজারে আরও কিছু জাতের আম থাকে। এরপর আসে আম্রপালি। এই আমের খোসা মসৃণ বা তেলতেলে, ছোট থেকে মাঝারি আকারের আম, পাকা আম হলুদাভ সবুজ, অগ্রভাগ কিছুটা সরু, শাঁস কমলা ও অনেক মিষ্টি, পাকা আম্রপালি আম বেশ কয়েক দিন ঘরে রাখা যায়। সারা দেশেই আম্রপালি আম পাওয়া যায় এবং এটি দেশব্যাপী ব্যাপক জনপ্রিয় একটি আম । ফজলি ও আশ্বিনা আসে মৌসুমের শেষের দিকে । বলতে গেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জে যত আম হয়, তার অর্ধেকই আশ্বিনা।এটি মৌসুমের সর্বশেষ আম। এটির শাঁস হলুদ এবং হলুদাভ কমলা। গড় ওজন ৫৫০ গ্রাম। এর মিষ্টতার পরিমান ১৯%। গুনগত মানের দিক থেকে এটি কিছুটা নিম্নমানের হলেও মৌসুমের শেষ আম হওয়ায় এর চাহিদা এবং বাণিজ্যিক কদর অন্য অনেক জাতের তুলনায় ঢের বেশি।
তুমুল চাহিদা সম্পন্ন এই ফলটির রয়েছে ব্যাপক অর্থনৈতিক গুরুত্ব।মৌসুমী আম বাণিজ্যে দেশের শ্রমশক্তির একটি বড় অংশ নিয়োজিত থাকে এবং দেশের অর্থনীতিতে আমের অবদান নেহায়েত কম নয়। রাজশাহী আঞ্চলিক কৃষি অফিসের তথ্যমতে, ২০১৮ সালে রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ ও নাটোরে আমের উৎপাদন হয় ৮ লাখ ৬৬ হাজার ৩৬১ টন। গত বছর (২০১৯) উৎপাদন হয়েছে ৮ লাখ ৩১ হাজার টন। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে চার জেলায় আম থেকে আয় ছিল ৩ হাজার ৫৯৫ কোটি ৩৮ লাখ ৯০ হাজার টাকা, যা ২০১৮-১৯ অর্থবছর হয়েছে ৩ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা। এছাড়া আমের মৌসুমে এখানে আট থেকে দশ লাখ লোক আমগাছ পরিচর্যা, বাগান পরিষ্কার রাখা, আম সংগ্রহ, বিক্রি ও পরিবহন ইত্যাদি কাজ করে এবং প্রাপ্ত আয় দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে।
আমের মৌসুমে দেশের বড় বিভিন্ন স্থানের আড়তদার পাইকারি ব্যবসায়ীরা রাজশাহীর বিভিন্ন আমের বাজার কিংবা সরাসরি আম বাগান থেকে আম সংগ্রহ করে নিয়ে আসেন। রাজশাহীর সবচেয়ে বড় আমের হাট বসে পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর বাজারে।এ হাটে প্রায় ১৫০টি আমের আড়ত আছে। আমের মৌসুমে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলে আমের বেচাকেনা। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাইকাররা এখানে আসেন আম কিনতে।আম বিক্রি হয় মণ প্রতি ৮০০ -২০০০ টাকায়। এ বাজারটিতে মূলত পাইকারি দরে আম বিক্রি হলেও খুচরা আমও কিনতে পাওয়া যায়। এছাড়া বেলপুকুর, শাহবাজপুর, বিড়ালদহ, শিবপুরহাটসহ বিভিন্ন গ্রাম গুলোতেও বসে অস্থায়ী আমের বাজার।
আমের রাজধানী খ্যাত চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাটে বসে বাংলাদেশের বৃহত্তম আমের বাজার।এর অবস্থান জেলা সদর থেকে ২৩ কিলোমিটার দূরে। সোনা মসজিদ স্থলবন্দরের সড়কে অবস্থান হওয়ায় এই বাজারটি বেশ জমজমাট থাকে। আমের সময়ে প্রতিদিন ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বসে এই আম বাজার। বাজারে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে চার কোটি টাকার আম কেনাবেচা হয়। ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের আড়তদাররা এখানে আসেন আম কিনতে।
ঢাকায় দেশের বৃহত্তম ফলের আড়ত হচ্ছে বাদামতলী ও ওয়াইজঘাট । দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কাভার্ড ভ্যানে করে আম এখানে পাঠানো হয়। এখান থেকে আম আবার ছড়িয়ে যায় ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন জায়গার পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতার কাছে। এভাবেই আমের পুরো মৌসুমজুড়ে সুস্বাদু জনপ্রিয় আমের ব্যবসা চলতে থাকে।
4.1 average based on all reviews.